কলকাতা: সূর্য, পৃথিবী ও মঙ্গলগ্রহের মধ্যে থাকায় গত নভেম্বরের সপ্তাহদুয়েক বাকি কাজকর্ম বন্ধ রেখেছিল নাসার রোভার Curiosity। তবে সেই সময়টা, মঙ্গলের (Mars Dawn To Dusk Video) দিনরাত্রি কেমন কাটে, সেই ছবি নিজের Hazcam-এ ধরে রেখেছিল সে। এবার সেই ছবিগুলিই ভিডিও আকারে প্রকাশ্যে আনলেন বিজ্ঞানীরা। ভোর থেকে সন্ধে পর্যন্ত, মঙ্গলের মাটিতে একটা গোটা দিন কেমন লাগে দেখতে, ধরা পড়েছে সেই ভিডিওয়।
বিশদে…
পৃথিবী ও মঙ্গলের মাঝামাঝি সূর্যের এই অবস্থানকে জ্যোতির্বিজ্ঞানের পরিভাষায় বলা হয়, ‘মাস সোলার কনজাংশন’। এই সময়টা সাধারণ ভাবে রোভারের ‘ছুটি’। কারণ? সোজা করে বললে, সূর্যের এমন অবস্থান রেডিও-তরঙ্গের চলাচলে বাধা তৈরি করে। তাই যতক্ষণ পর্যন্ত সূর্য, পৃথিবী ও মঙ্গলের মধ্যে থাকে, তত ক্ষণ পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা রোভার Curiosity-কে কোনও কাজের নির্দেশ পাঠান না। অর্থাৎ মঙ্গলগ্রহের আনাচেকানাচে ঘুরে ঘুরে কাজ করতে পারে না সে। তাই বলে হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকা? নাহ, সেটিও নয়। একেবারে ‘অলস’ করে না রেখে, নাসা এই সময়টা রোভারকে খানিকটা সূর্যঘড়ির আদলে ব্যবহার করে নিতে চেয়েছিল।
Hey look – I’m a sundial!
Ok, not exactly, but I did get a sol to enjoy my surroundings. During solar conjunction, I used my hazard cameras to study the Martian weather and dust.
As this Earth year comes to an end, I hope you’ll take the time to soak in what’s around you. pic.twitter.com/eCQAcVtT1L
— Curiosity Rover (@MarsCuriosity) December 28, 2023
কী ভাবে?
Curiosity-র সামনে এবং পিছনে লাগানো রয়েছে কিছু সাদা-কালো ক্যামেরা। বিজ্ঞানীদের ভাষায়, Hazcam। এই ক্যামেরা দিয়েই মঙ্গলের একটি গোটা দিনের ছবি তুলেছে রোভার। পৃথিবীর সময়ের নিরিখে দিনের মাপ ১২ ঘণ্টা। কিন্তু কী ভাবে তোলা হল ছবি? এখানেই খানিক চমক। আসলে, ওই সময়টা জুড়ে মঙ্গলের মাটিতে পড়া নিজের ছায়ার ছবি তুলে গিয়েছে Curiosity। এখানেই মজা। ভোরের বেলা ছায়া একরকম, বেলা যত গড়াচ্ছে, ছায়ার গতি-প্রকৃতি তত পাল্টে যাচ্ছে। কাকভোর থেকে গোধূলি পর্যন্ত, এই ভাবেই মঙ্গলের গোটা দিনের ছবি ক্যামেরাবন্দি করেছে Curiosity। এই জন্য অবশ্য, ‘ব্রেক’-এ যাওয়ার আগেই তাকে সবরকম নির্দেশ পাঠিয়ে দিয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা। তবে প্রতিদিন তার উপর নজরদারিও চালিয়েছে। রোভারের স্বাস্থ্যের উপর সবকিছুই নির্ভরশীল।
অবশেষে এসেছে সাফল্য। তবে যে ভাবে ছবিগুলি Curiosity পাঠিয়েছিল, হুবহু সেই ভাবেই সেগুলি প্রকাশ করা হয়নি। কিছু পরিবর্ধন ও পরিমার্জন করা হয়েছে। তার পর এই ভিডিও। Hazcam-র ওয়াইড অ্যাঙ্গেল লেন্সে যা ধরা পড়েছিল, তা ঠিক করতে রি-প্রোজেকশনও করা হয়। আখেরে যা সামনে এসেছে, তা নিয়ে এর মধ্যেই তুমুল হইচই। উদ্দীপনা দিকে দিকে। এমন সময়ই এই ভিডিও প্রকাশ্যে এল যখন মহাকাশ গবেষণার অন্য একটি দিকে রেকর্ড গড়ার প্রথম পদক্ষেপ করেছে ইসরো।
সব মিলিয়ে নতুন বছরে মহাকাশ বিজ্ঞানের দুনিয়াতেও ইতিবাচক যাত্রা শুরু।
আরও পড়ুন:লক্ষ্য ব্ল্যাক হোলের রহস্য উন্মোচন, কিছুক্ষণেই মহাকাশযাত্রা করবে ISRO র এক্সপোস্যাট