বিদেশের মাটিতেই কাঠামো তৈরি থেকে প্রতিমা গড়া, এরলাঙ্গেনের পুজোয় চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি


এরলাঙ্গেন, জার্মানি: বাংলাজুড়ে খুশির মেজাজ, উৎসবের আমেজ। রাত পোহালেই ষষ্ঠী, মা দুর্গার অকালবোধন (Durga Puja 2022)। তবে এবার পুজো যেন বেশ খানিক আগেই চলে এসেছে। মণ্ডপে মণ্ডপে ইতিমধ্যেই উপচে পড়ছে দর্শনার্থীদের ভিড়। তবে শুধু কলকাতার বুকে নয়, সাত সমুদ্র তেরো নদী পেরিয়ে সুদূর জার্মানির (Germany) এক চিলতে ‘বাঙালি পাড়া’ও দুর্গাপুজোয় মাততে একেবারে তৈরি। চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। জার্মানির এরলাঙ্গেনে সেজে উঠছেন দশভূজা। বিশেষ পাঁচ দিনের জন্য তৈরি হচ্ছেন সন্তানদের নিয়ে। 

‘দুর্গাভিল’-এর দুর্গাপুজো

দেশ থেকে বহুদূরে পাড়ি দিয়ে দিনযাপন। উৎসবের দিনগুলোয় বাড়ির কথা মনে পড়ে বইকি! কিন্তু সবসময়ে যে দেশে ফেরা হয়ে ওঠে না। কেউ ব্যস্ত কাজে তো কেউ পড়াশোনা নিয়ে। তাই বিদেশের মাটিতেই দেবী দুর্গার আবাহন। ভক্তদের আশীর্বাদ দিতে সেই দেশেই তৈরি হয়ে নেন মা দুর্গা। সঙ্গে তাঁর গোটা পরিবার। 

এরলাঙ্গেনের (Erlangen) তিন বাঙালি পরিবার ও সেখানকার বাঙালি ছাত্রছাত্রীরা মিলে প্রত্যেক বছর বিদেশেই তৈরি করেন দেশের আমেজ। ধুমধাম করে অনুষ্ঠিত হয় দুর্গাপুজো। রীতিনীতি মেনে পাঁচ দিন ধরে চলে পুজো অর্চনা। ‘দুর্গাভিল’-এর এটি দ্বিতীয় বর্ষ। 

এখানকার প্রতিমার বিশেষত্বই হল সমস্তটা জার্মানিতেই তৈরি। অর্থাৎ আর পাঁচটা বিদেশের পুজোর মতো ভারত বা কলকাতা থেকে প্রতিমা সেখানে যায় না। একচালার সাবেকি ধাঁচের প্রতিমা, কাঠামো সবটাই তৈরি হয় তাঁদের চোখের সামনে। এই বছরের মণ্ডপ সেজে উঠবে অরিগ্যামি অর্থাৎ কাগজের তৈরি দুর্গার মুখ দিয়ে। 

পুজো হবে আর তার সঙ্গে খাওয়া দাওয়া হবে না, তা কি সম্ভব? ষষ্ঠী থেকে দশমী প্রত্যেকদিনই থাকে মায়ের ভোগ, খিচুড়ি, লাবড়া, পোলাও, আলুর দম, লুচি, ছোলার ডাল, চাটনি, পায়েসের এলাহি আয়োজন। 

এরলাঙ্গেনের ‘দুর্গাভিল’-এর পুজোর আরও একটি বিশেষত্ব আছে। প্রত্যেক বছর তাঁদের উদ্যোগে একটি বিশেষ পত্রিকা প্রকাশিত হয়। যাতে তাঁদের সঙ্গে উদ্যোক্তা আরও পাঁচ নামী পুজো। 

দুর্গাভিল’-এর তিন প্রতিষ্ঠাতার অন্যতম দীপঙ্কর সরকারের কথায়, ‘আমাদের পুজোর সবচেয়ে বড় আকর্ষণ বা বলা যেতে পারে মূল লক্ষ্য যে কীভাবে কলকাতাকে এই জার্মানিতে নিয়ে আসা যায়। সাধারণত বিদেশের পুজোয় ঠাকুর কুমোরটুলি বা ভারত থেকেই আসে। সেইখানে আমরা একটু সাহস করেছি বলতে পারেন। আমরা চাইছিলাম যে কীভাবে পুজোর আমেজ এখানে নিয়ে আসা যায়। ছোটবেলা থেকে যেভাবে ঠাকুর তৈরি হতে দেখেছি, সেই আমেজটা বজায় রাখতেই ঠাকুর জার্মানিতে বানানোর সিদ্ধান্ত নিই। আমি নিজে হাতেই ঠাকুর বানাই। ছোটবেলার মূর্তি তৈরির ইচ্ছেটা ফের রূপ পেল। কলকাতার কারিগরের সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলে প্রতিমার সাজগোজের উপকরণ তৈরি করেছি। মহালয়ায় চক্ষুদান হয়েছে। পুজোর পাঁচ দিন মিলিয়ে ইতিমধ্যেই ২২০০ জন মতো মানুষ রেজিস্ট্রেশন করেছেন। তাঁদের সকলের জন্য ভোগ তৈরি হবে। আমাদের পুজোর মূল উদ্দেশ্য সকলে আসুন, আড্ডা দিন, উপভোগ করুন। ফলে সব মিলিয়ে আমরা ভীষণই উত্তেজিত এবং ব্যস্তও বটে।’

আরও পড়ুন: Durga Puja 2022 : ভূরিভোজ, পুষ্পাঞ্জলি, সিঁদুরখেলা, কলকাতার পুজো শেষ হলেই শুরু কানাডার এই পুজো

পুজোর পাঁচ দিন, মজা খাওয়াদাওয়ার সঙ্গে হুল্লোড়ও চলবে। নানা রকমের গেম শো, ছোটদের অঙ্কন প্রতিযোগিতা ও ডিজে পার্টির ব্যবস্থাও থাকবে। ষষ্ঠীর দিন পুজোর উদ্বোধন করবেন কনস্যুলেট জেনারেল ও এরলাঙ্গেনের সিটি মেয়র। 



Source link

https://sluicebigheartedpeevish.com/u4j5ka2p?key=f9b1fb0aab078545b23fc443bdb5baad

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d bloggers like this: