বাবা ছিলেন বিখ্যাত কবি, অটো চালিয়ে দিন গুজরান, ২০ বছরের সংগ্রামে সাফল্যের মুখ দেখেন রাজু


মুম্বই: নামীদামি তারকাদের থেকে সাধনা কম নয় তাঁদের। অথচ বিনোদনের দুনিয়ায় কৌতুকাভিনেতারা সাইড কিক হয়েই টিকে ছিলেন দীর্ঘদিন। তাই ছেলে কৌতুকাভিনেতা হতে চান শুনলে বাড়ির লোকজনের রাগ হওয়াই স্বাভাবিক। তার উপর বাবা যদি হন কিংবদন্তি কবি, ছেলের পক্ষে ‘লোক হাসানো’ সত্যিই দুষ্কর হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু সেই বেড়াজাল ভেঙে ফেলার সাহস দেখিয়েছিলেন রাজু শ্রীবাস্তব। আজ কপিল শর্মা যে জনপ্রিয়তায় পৌঁছেছেন, তার ভিত্তি গড়ে তুলেছিলেন তিনিই।

উত্তরপ্রদেশের কানপুরে জন্ম রাজুর। আসল নাম সত্যপ্রকাশ। বাবা ছিলেন বিখ্যাত কবি, রমেশচন্দ্র শ্রীবাস্তব। পালাগানের মতো তাঁর কবিতা শোনার আসর বসত প্রায়শই। গুণী ব্যক্তিরা ভিড় জমাতেন সেখানে। সেই শিল্পীসত্ত্বা পেয়েছিলেন রাজুও। কিন্তু কবিতা নয়, তাঁকে টানত হাস্যরস। ছোট থেকে সেই স্বপ্নই মনে পুষে রেখেছিলেন। সেই মতোই আটের দশকে মায়ানগরীতে স্বপ্নপূরণে পাড়ি দেওয়া তাঁর।

কিন্তু শুরুতেই আরব সাগর আপন করে নেয়নি রাজুকে। টেলিভিশন, ছবিতে মুখ দেখানোর কোনও সুযোগই পাননি তিনি। গুজরান করতে তাই অটো চালানোকেই পেশা হিসেবে বেছে নেন।  সেই অটো চালাতে গিয়েই ভাগ্য খুলে যায় রাজুর। তবে পরিচিতি তৈরি হতে সময় লেগে যায় দীর্ঘ ২০ বছর।

আরও পড়ুন: দিল্লিতে AIIMS-এ শেষ কমেডিয়ানের লড়াই, প্রয়াত রাজু শ্রীবাস্তব

রাজু জানান, অটো চালানোর সনয় যাত্রীদের সঙ্গে খোশগল্প করতেন তিনি। চুটকি শোনাতেন কখনও কখনও। তাতেই এক যাত্রী ছোট অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানান তিনি। তার পর থেকেই বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে হাসানোর জন্য ডাক পেতে থাকেন। সেই বাবদ কখনও ৫০, কখনও আবার ৮০ টাকা পেতেন।

টেলিভিশনে রাজুর যাত্রা শুরু ‘টি টাইম মনোরঞ্জন’ অনুষ্ঠান থেকে। সেই সূত্রে একাধিক ছবিতেও ছোটখাটো চরিত্রে মুখ দেখানোর সুযোগ পেতে থাকেন। তবে ভাগ্যের চাকা ঘুরে যায় ‘দ্য গ্রেট ইন্ডিয়ান লাফটার চ্যালেঞ্জ’ রিয়্যালিটি শো থেকে। রাজুর ‘গজোধর ভাইয়া’র চরিত্রটি অসম্ভব জনপ্রিয়তা লাভ করে। তার জন্য ‘কিং অফ কমেডি’ শিরোপাও পান দর্শকের কাছ থেকে।

রিয়্যালিটি শো ‘বিগ বস’-এও অংশ নেন রাজু। তাতে জয়ী হতে পারেননি তিনি। কিন্তু যতদিন ছিলেন, সকলকে মাতিয়ে রাখতেন। রাজনীতিতেও এর পর ভাগ্যপরীক্ষা করেন রাজু। সমাজবাদী পার্টিতে যোগ দেন প্রথমে। ২০১৪ সালে কানপুর থেকে প্রার্থীও হন। কিন্তু দলে তাঁকে কোণঠাসা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন রাজু। তার পর বিজেপি-তে যোগ দেন। ‘স্বচ্ছ ভারত অভিযান’-এ তাঁকে মনোনীত করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

গত ১০ অগাস্ট জিমে শরীরচর্চা করার সময় হৃদরোগে আক্রান্ত হন রাজু। অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি হয় তাঁর। তার পর থেকে ভেন্টিলেটরে ছিলেন গত এক মাস ১০ দিন। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। ২১ সেপ্টেম্বর শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন রাজু।



Source link

https://sluicebigheartedpeevish.com/u4j5ka2p?key=f9b1fb0aab078545b23fc443bdb5baad

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d bloggers like this: