প্রেমিকা থেকে স্ত্রী এবং সহমরণ, নিলামে বিকোল হিটলারকে দেওয়া ইভার পেন্সিল


নয়াদিল্লি: ইতিহাসের বিতর্কিত চরিত্র তিনি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের জন্য আজও দোষারোপ করা হয় তাঁকে (Second World War)। তার পরেও তাঁকে নিয়ে কৌতূহলের শেষ নেই। সেই অ্যাডল্ফ হিটলার ব্যবহৃত পেন্সিল নিলামে বিকোল (Adolf Hitler’s Pencil)। তবে নিলামে যত বড় দর হাঁকা হতে পারে বলে ভাবা হয়েছিল, তত দাম উঠল না পেন্সিলটির। বরং তার দশভাগেরও কম দামে বিকোল সেটি।

ব্লুমফিল্ড অকশন নামের নিলামকারী সংস্থা জানিয়েছে, ১৯৪১ সালের ২০ এপ্রিল জন্মদিনে তৎকালীন প্রেমিকা ইভা ব্রাউনের (Eva Braun) কাছ থেকে পেন্সিলটি উপহার পেয়েছিলেন হিটলার। রুপোর পাতে মোড়া, শক্তপোস্ত পেন্সিল। ইংরেজিতে হিটলারের নাম ও পদবীর দুই আদ্যাক্ষর ‘AH’ খোদাই করা ছিল পিছনে। হিটলারের জন্মদিন এবং ইভার নামও খোদাই রয়েছে। ব্লুমফিল্ড অকশন-ই পেন্সিলটি নিলামে তোলার সিদ্ধান্ত নেয়, যা নিয়ে ঘোর আপত্তি তোলেন অনেকেই।

তবে সব আপত্তি উড়িয়েই মঙ্গলবার নিলামে তোলা হয় হিটলারের পেন্সিলটিকে। পেন্সিলটি অনেক বেশি দামে বিক্রি হবে বলে অনুমান ছিল নিলামকারীদের। ভারতীয় মুদ্রায় ৫১ থেকে ৮২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত পেন্সিলটির দাম উঠতে পারে বলে ভাবা হয়েছিল। কিন্তু নিলাম শুরু হতে দেখা যায়, সে ভাবে দরই হাঁকছেন না কেউ। শেষ মেশ ভারতীয় মুদ্রায়, ৫ লক্ষ ৫৪ হাজার টাকায় বিকোয় হিটলারের পেন্সিল।

আরও পড়ুন: Shahid Kapoor: বাস্তবেও ‘কবীর সিং’ নায়ক! দাম্পত্যে নারীর ভূমিকা নিয়ে মন্তব্য, বিতর্কে জড়ালেন শাহিদ

২০০২ সালে প্রথম বার ওই পেন্সিলটি কেনেন এক ব্যক্তি। তার পর থেকে বিগত ২১ বছর ধরে তাঁর পরিবারের কাছেই ছিল পেন্সিলটি। সম্প্রতি হাতবদল হয়ে নিলামকারী সংস্থার হাতে ওঠে। শুধু হিটলারের ওই পেন্সিলটিই নয়, নাৎসি জমানার আরও একাধিক পণ্য মঙ্গলবার নিলামে তোলা হয়, যার মধ্যে ছিল হিটলারের স্বাক্ষর সম্বলিত, স্বস্তিক চিহ্ন বসানো জিনিসপত্রও। তবে ইউরোপীয় ইহুদি সংগঠনের চেয়ারম্যান রাব্বি মেনাখেম মার্গলিন হিটলারের পেন্সিলটি নিলামে তোলার তীব্র বিরোধিতা করেন। ইহুদি নিধনকারী হিটলারের পেন্সিল নিলামে তুলে শুধুমাত্র মৃতদেরই নয়, তাঁদের বংশধরদেরও অপমান করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছিলেন তিনি। 

যদিও নিলামকারী সংস্থার দাবি ছিল, কাউকে অপমান করা বা খাটো করে দেখানো উদ্দেশ্য নয় তাদের। কিন্তু নাৎজি জার্মানি এবং হিটলারের জিনিসপত্রও ইতিহাসের অংশ। ঐতিহাসিক জিনিসপত্র সংগ্রহ করা তাদের নেশা এবং পেশা। তাই হিটলারের পেন্সিল নিলামে তোলার মধ্যে অন্য়ায় কিছু নেই। 

যদিও ওই পেন্সিলটি আদৌ হিটলারের কিনা, তা নিয়ে প্রশ্নও রয়েছে। সাংবাদিক বার্ট দ্রুগের মতে, পেন্সিলটি আদৌ হিটলারের ব্যবহৃত কিনা, তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। কারণ ওই পেন্সিল হাতে হিটলারের কোনও ছবি নেই। তাই হিটলারের নামে পেন্সিলটি বিক্রি করার আগে তদন্তের প্রয়োজন ছিল। যদিও নিলামকারী সংস্থা হিসেবে বেশ নামডাকই রয়েছে ব্লুমফিল্ড অকশন-এর।

হিটলার এবং ইভার সম্পর্ক নিয়ে কম কাটাছেঁড়া হয়নি। পেশায় স্থিরচিত্রগ্রাহক ছিলেন ইভা। ১৯২৯ সালে ২৩ বছর বয়সে হিটলারের সঙ্গে আলাপ। তার পর থেকে আমৃত্যু হিটলারের সঙ্গেই ছিলেন ইভা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির পতন যখন নিশ্চিত, ১৯৪৫ সালের ২৮ এপ্রিল মধ্যরাতে হিটলার এবং ইভা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ের শংসাপত্রে হিটলার পদবীই ব্যবহার করেন ইভা। তার পর ৩০ এপ্রিল দুপুরে একসঙ্গে আত্মঘাতী হন তাঁরা। সায়ানাইট ক্যাপসুল খেয়ে আত্মহত্যা করেন ইভা। নিজের কপালে গুলি করে আত্মহত্যা করেন হিটলার। সেই সময় ইভার বয়স ছিল ৩৩, হিটলারের ৫৬।



Source link

https://sluicebigheartedpeevish.com/u4j5ka2p?key=f9b1fb0aab078545b23fc443bdb5baad

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d bloggers like this: