ধুঁকছে অর্থনীতি, হাহাকার রব, পাকিস্তানের সঙ্কটমোচনে এগিয়ে এল IMF, অর্থসাহায্য সৌদি-আমিরশাহিরও


ইসলামাবাদ: দীর্ঘদিন ধরে দরাদরির পর অবশেষে স্বস্তির নিঃশ্বাস। অর্থনৈতিক সঙ্কটে পাকিস্তানের পাশে- দাঁড়াল আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডার (IMF Bailout)। পাকিস্তানের (Pakistan Crisis) অর্থনীতিতে গতি ফেরাতে, স্বল্পমেয়াদে ৩০০ কোটি ডলারের ঋণ প্যাকেজ মঞ্জুর করল IMF. দফায় দফায় এই ঋণের টাকা পাকিস্তানের হাতে তুলে দেওয়া হবে। প্রথমে দেওয়াা হবে ১২০ কোটি ডলার। তার পর কিস্তিতে বাকি টাকা দেবে IMF. 

অর্থনৈতিক সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে সবমিলিয়ে ৭০০ কোটি ডলারের অর্থসাহায্য চেয়েছিল পাকিস্তান। কিন্তু ওই বিপুল পরিমাণ টাকা দিতে রাজি হয়নি IMF. বরং পরিস্থিতি বিবেচনা করে, সবদিক খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছিল। তার পর থেকে দফায় দফায় দুই পক্ষের মধ্যে বৈঠক হয়। জুন মাসে সমঝোতায় উপনীত হয় দুই পক্ষ। তার পর বুধবার পাকিস্তানকে ৩০০ কোটি ডলারের অর্থসাহায্য়ে অনুমোদন দেয় IMF. 

বুধবার  IMF-এর তরফে বিবৃতি প্রকাশ করে বলা হয়, ‘IMF-এর এগজিকিউটিভ বোর্ড পাকিস্তানকে ৩০০ কোটি ডলার অর্থসাহায্য় দিতে সম্মত হয়েছে। সেই বাবদ ন’মাসের চুক্তি হয়েছে পাকিস্তানের সঙ্গে, যাতে সে দেশের অর্থনীতিকে স্থিতিশীল অবস্থায় আনা সম্ভব হয়’। অর্থনৈতিক সঙ্কটে জর্জরিত পাকিস্তানে খাদ্যসঙ্কটও দেখা দিয়েছে। তার উপর খাঁড়া হয়ে নেমে এসেছে বন্যা। মুদ্রাস্ফীতির চোখরাঙানি যেমন রয়েছে, তেমনই সঞ্চিত বিদেশি মুদ্রার ভাঁড়ার শূন্য হয়ে গিয়েছে। সবদিক বিবেচনা করেই পাকিস্তানকে অর্থসাহায্য়ে অনুমোদন দিল IMF.  

আরও পড়ুন: Odisha Train Accident: ওড়িশা ট্রেন দুর্ঘটনায় সাসপেন্ড আরও ৪ রেলকর্মী, অভিযোগ ‘সজাগ ছিলেন না তাঁরা’

IMF-এর থেকে অর্থসাহায্য় পেতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ(Shehbaz Sharif)। দফায় দফায় IMF আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন তিনি। পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী ইশক দরও উপস্থিত ছিলেন সেই বৈঠকে। তাই IMF-এর ঘোষণার পরই ট্যুইটারে তাদের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানান শেহবাজ। লেখেন, ‘স্বল্পমেয়াদি চুক্তিতে IMF যে ৩০০ কোটি ডলারের অনুমোদন দিয়েছে, তা দেশের সার্বিক অর্থনীতিকে স্থিতিশীলতার দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এর ফলে অর্থনৈতিক সঙ্কটের মোকাবিলা করতে সক্ষম হবে পাকিস্তান’।

যদিও আরও আগেই IMF-এর থেকে এই অর্থসাহায্য পেতে পারত পাকিস্তান। গতবছর ডিসেম্বরেই ১১০ কোটি ডলার পাকিস্তান সরকারের তুলে দেওয়ার কথা ছিল IMF-এর। কিন্তু প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এবং IMF-এর মধ্যে আগে যে চুক্তি হয়েছিল, তার কিছু শর্ত মানতে রাজি হয়নি বর্তমান শেহবাজ সরকার। সেই নিয়ে টানাপোড়েন শুরু হলে আটকে যায় টাকা। এর পর প্যারিস উড়ে যান খোদ শেহবাজ। সেখানে IMF প্রধান ক্রিস্তালিনা জর্জিভার সঙ্গে দেখা করেন তিনি। তার পরই অনুমোদন মিলল। 

২০২২ সালের এপ্রিল মাসে পাক সংসদে আস্থাভোটে পরাজিত হয়ে মসনদ ছাড়তে হয় ইমরানকে। তার পর প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত হন শেহবাজ। গোড়া থেকেই অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করে তোলা লক্ষ্য ছিল শেহবাজের। তার জন্য় সরকারি দফতরে কাজের সময়কাল বাড়ানো থেকে বেতনে, কোপ, কিছুই বাদ দেননি। কিন্তু তাঁর সব চেষ্টায় জল ঢেলে দেয় ভয়াবহ বন্যা, যাতে ১৭৩৯ জনের মৃত্যু হয়। ভেঙে পড়ে ২০ লক্ষ বাড়িঘর। ক্ষয়ক্ষতি হয় ৩০০০ হাজার কোটি ডলারের। 

তাই IMF-এর সঙ্গে সুসম্পর্ক তৈরিতে উদ্যোগী হন শেহবাজ। অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, IMF মাত্র ৩০০ কোটি ডলার মঞ্জুর করেছে আপাতত। কিন্তু পাকিস্তানের অর্থনীতিতে গতি ফেরাতে হলে, আগামী দু’বছরে অন্তত ২০০০ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন। কারণ বিদেশি ঋণ এবং সুদের বোঝা ক্রমশ চেপে ধরছে পাকিস্তানকে। তাদের সঞ্চিত বিদেশি মুদ্রার পরিমাণও কমে ৪০০ কোটি ডলারে পৌঁছে গিয়েছে। তবে শুধু IMF-ই নয়। পাকিস্তানের পাশে দাঁড়িয়েছে সৌদির আরবও। পাক সেন্ট্রাল ব্যাঙ্কে ২০০ কোটি ডলার জমা দিয়েছে তারা। সংযুক্ত আরব আমিরশাহিও ১০০ কোটি ডলার জমা দিয়েছে। IMF-কে দেখে অন্যান্য অর্থনৈতিক সংস্থাও পাকিস্তানের সঙ্কটমোচনে এগিয়ে আসবে বলে আশাবাদী বিশেষজ্ঞরা।





Source link

https://sluicebigheartedpeevish.com/u4j5ka2p?key=f9b1fb0aab078545b23fc443bdb5baad

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d bloggers like this: