চাকা গড়াল ‘প্রজ্ঞান’এর, চাঁদের মাটিতে অশোক স্তম্ভের ছাপ


কলকাতা: বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে চাঁদের অগম্য স্থানে ভারত। ভারতের হাতের মুঠোয় চাঁদ। সূর্য থেকে শক্তি সঞ্চয় করে চাঁদের মাটিতে নামল রোভার ‘প্রজ্ঞান’ (Pragyan Rover)। অবতরণের পরে চাঁদের মাটিতে শক্তি সঞ্চয় করেছে ল্যান্ডার ‘বিক্রম’। বুধবার সন্ধে ৬টা বেজে ৪ মিনিটে চাঁদের মাটিতে নেমেছে চন্দ্রযান ৩ (Chandrayaan 3)। তার প্রায় সাড়ে ঘণ্টাতিনেক পরে ল্যান্ডার ‘বিক্রম’ থেকে নামল রোভার ‘প্রজ্ঞান’।

চাঁদের মাটিতে অশোক স্তম্ভের ছাপ:
প্রজ্ঞান রোভারের চাকায় রয়েছে অশোর স্তম্ভের প্রতীক। চাঁদের মাটিতে পথচলা শুরু করতেই সেখানে ছাপ পড়ছে অশোক স্তম্ভের।

অ্যাস্ট্রোফিজিসিস্ট অঙ্কন দাস এবিপি আনন্দকে জানান, অবতরণের পরে চন্দ্রযান ৩-এর ল্য়ান্ডারের সোলার প্যানেল (Solar Panel) খুলেছে। তারপর সৌরশক্তি থেকে চার্জ নিয়েছে ল্যান্ডার। অবতরণের পরে যে কাজ করা হয়েছে তার জন্য সাড়ে সাতশো ওয়াটের পাওয়ার দরকার। সেই শক্তি সঞ্চয় করার পরেই শুরু হয়েছে পরবর্তী ধাপের কাজ। চন্দ্রযান ৩ অবতরণ করার পরে চাঁদের মাটি থেকে ধুলো উঠেছে উপরের দিকে। সেটা আস্তে আস্তে মাটিতে থিতিয়ে পড়েছে। তারপরে দেখা হয়েছে, ল্যান্ডারের সব যন্ত্রপাতি ঠিকমতো কাজ করেছে কিনা। পৃথিবী থেকে পাঠানো সব কম্যান্ড নিতে পারছে কিনা সেটাও দেখা হয়েছে। সব বার্তা ঠিকমতো আদান-প্রদান করা যাচ্ছে কিনা সেটা দেখা হয়েছে, তারপরেই ল্যান্ডার থেকে বেরিয়ে চাঁদের মাটিতে নামে রোভার। বহু কাজ রয়েছে রোভারেরও। বায়ু, স্পেকটোমেট্রি, প্লাজমা সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য় সংগ্রহ করবে ল্যান্ডারে থাকা যন্ত্র। রয়েছে আরও কাজ।

কী কী কাজ হবে?
বুধবার থেকেই শুরু হল চন্দ্রদিন। অর্থাৎ চাঁদের দিন। ওই সময় চাঁদের ওই প্রান্তে পড়বে সূর্যের হালকা আলো। সেই আলোকে কাজে লাগিয়ে পৃথিবীর হিসেবে মাত্র ১৪ দিন যা চাঁদের নিরিখে এক চন্দ্রদিন কাজ করবে চন্দ্রযান-৩।  চাঁদের বায়ুমণ্ডলের মৌলিক গঠনের উপর তথ্য সংগ্রহ করবে ৬ চাকার রোভার। রোভারে ২টি পেলোড। চন্দ্রপৃষ্ঠের মৌলিক গঠন বোঝার পাশাপাশি, চাঁদে থাকা পাথরের রাসায়নিক উপাদান নিয়ে পরীক্ষা চালাবে তারা। কিন্তু এতসব করতে হবে মাত্র ১৪ দিনে। জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের মতে, চাঁদের দক্ষিণ গোলার্ধে যে জায়গায় সূর্যের আলো পড়ে না, সেখানে তাপমাত্রা হিমাঙ্কের ২০০ ডিগ্রি নীচে। এই অংশে বরফের আকারে জল থাকতে পারে। উত্তর গোলার্ধের মাটি ও পাথর পৃথিবীতে এনে গবেষণা করেছে তিনটি দেশ। কিন্তু দক্ষিণ গোলার্ধ. অনেকটাই অচেনা। সেই অচেনা অংশের কাছাকাছি গিয়ে সেখানকার পরিবেশকে চিনবে রোভার।

যা পরিমাপ করা হয়েছিল, সেই অঙ্ক মেনেই চাঁদের মাটিতে নেমেছে ল্যান্ডার ‘বিক্রম’। প্রথমে চারটি ইঞ্জিন চলেছে। তারপরে ২টি ইঞ্জিন বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফলে ২টি ইঞ্জিনের উপর ভর করেই চাঁদের মাটি ছুঁয়েছে বিক্রম। মাটি ছোঁয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বিপুল পরিমাণের চাঁদের মাটি ও ধুলো উপরে উঠেছে। চাঁদের অভিকর্ষজ বল অত্যন্ত লঘু। ফলে সেই ধুলো নামতে দীর্ঘ সময় লাগছে। তবে নিজে নিজে তা নেমে যাবে। ইচ্ছে করেই এই সময়টা নিয়েছে ISRO. ভারতীয় মহাকাশ সংস্থা চায়নি চাঁদের ধুলো ক্যামেরা ও অন্য যন্ত্রাংশকে ঢেকে দেয়। যার ফলে ক্ষতি হতে পারত ওই যন্ত্রাংশগুলির। সেই কারণেই সময় নিয়েছে ISRO.

আরও পড়ুন: বিশ্বে প্রথম ভারত! চন্দ্রযান ৩-অভিযানে নয়া পালক ইসরোর মুকুটে



Source link

https://sluicebigheartedpeevish.com/u4j5ka2p?key=f9b1fb0aab078545b23fc443bdb5baad

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d bloggers like this: