গাজায় শান্তি ফেরানোর প্রস্তাবে ভোট দিল না ভারত, তীব্র সমালোচনার মুখে দিল্লি


নয়াদিল্লি: গাজায় যুদ্ধবিরতির সপক্ষে ভোটদান থেকে বিরত থাকল ভারত (India Abstains from UNGA Voting)। মানবিকতার খাতিরে অবিলম্বে ইজরায়েল এবং প্যালেস্তাইনের হামাস সংগঠনের মধ্যে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব জমা পড়েছিল রাষ্ট্রপুঞ্জে (UN General Assembly)। জর্ডানের তরফে রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভায় ওই খসড়া প্রস্তাব জমা দেওয়া হয়। মানবিকতার খাতিরে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেওয়া হয় তাতে। কিন্তু ভারত সেই ভোটাভুটিতে অংশ নিল না। (Israel Palestine War)

১৯৩টি সদস্য দেশের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভার দশম জরুরি ও বিশেষ অধিবেশন চলছিল রাষ্ট্রপুঞ্জে। সেখানে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির পক্ষে খসড়া প্রস্তাব জমা দেয় জর্ডান। এর পাশাপাশি বাংলাদেশ, পাকিস্তান, রাশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং মলদ্বীপ-সহ মোট ৪০টি দেশের পৃষ্ঠপোষকতা ছিল ওই খসড়া প্রস্তাবে। 

‘Protesction of Civilians and Upholding legal and humanitarian obligations’ শীর্ষক ওই প্রস্তাবে নিরীহ নাগরিকদের নিরাপত্তাপ্রদান করা থেকে তাঁদের মানবাধিকার রক্ষার কথা বলা হয়। ভোটাভুটি শুরু হলে, ওই প্রস্তাবের সপক্ষে ১২০টি দেশ ভোট দেয়। প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভোট দেয় ১৪টি দেশ। ভোটদান থেকে বিরত থাকে ৪৫টি দেশ, যার মধ্যে অন্যতম ভারত। ভারতের পাশাপাশি, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, জাপান, ইউক্রেন এবং ব্রিটেন ভোটদান থেকে বিরত থেকেছে।

ভারতের তরফে যুক্তি দেওয়া হয়, ওই প্রস্তাবের কোথাও সন্ত্রাসী সংগঠন হামাসের উল্লেখ নেই। যদিও গাজায় মানবিক সাহায্য় পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনও বাধা থাকা উচিত নয় বলে জানায় ভারত। কিন্তু ভোটদান থেকে বিরত থাকে তারা। ভারতের এই সিদ্ধান্ত ঘিরে সমালোচনা শুরু হয়েছে আন্তর্জাতিক মহলে। এমনকি দেশের অন্দরেও দিল্লির সিদ্ধান্ত ঘিরে প্রশ্ন উঠছে। কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা এ নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘চোখের বদলা চোখ হলে, গোটা দুনিয়া অন্ধ হয়ে যাবে, বলেছিলেন মহাত্মা গাঁধী। আমি স্তম্ভিত এবং লজ্জিত যে আমাদের দেশ গাজায় যুদ্ধবিরতির সপক্ষে ভোটদান থেকে বিরত থাকল। অহিংসা এবং সত্যের উপর দাঁড়িয়ে আমাদের দেশের প্রতিষ্ঠা হয়েছিল, সেই নীতি মেনেই স্বাধীনতা সংগ্রামীরা প্রাণ বিসর্জন দিয়েছেন, দেশের সংবিধানে জাতীয়তাবাদের ব্যাখ্য়াও তার উপর ভিত্তি করেই’।

সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রিয়ঙ্কা আরও লেখেন, ‘নির্দিষ্ট কোনও অবস্থান না নিয়ে, নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করা, চোখের সামনে মানবাধিকার খর্ব হতে দেখা, খাদ্য, জল, চিকিৎসা, বিদ্যুৎ এবং যোগাযোগ পরিষেবা থেকে লক্ষ লক্ষ মানুষকে বঞ্চিত হতে দেখা, প্যালেস্তাইনের লক্ষ লক্ষ নারী পুরুষ, শিশুর অস্তিত্ব মুছে যাওয়া নীরবে দেখে যাওয়া আমাদের দেশের এযাবৎকালীন অস্তিত্বের পরিপন্থী’।

এ প্রসঙ্গে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টির নেতা শরদ পওয়ারও। তিনি বলেন, “প্যালেস্তাইন নিয়ে ভারত সরকার বোধহয় ধন্দে রয়েছে। বরাবর প্যালেস্তাইনকে সমর্থন করে এসেছে ভারত, ইজরায়েলকে নয়। হাজার হাজার মানুষ প্যালেস্তাইনে মারা যাচ্ছেন রোজ। ভারত কখনও একে সমর্থন করেনি এতদিন। তাই বর্তমান সরকার বোধহয় ধন্দে পড়েছে। “

জর্ডানের ওই প্রস্তাবে সংশোধনের দাবিও ওঠে রাষ্ট্রপুঞ্জের অধিবেশনে। ভার- এবং আরও ৮৭টি দেশ সংশোধনের দাবিতে সমর্থন জানায়। রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভা গত ৭ অক্টোবর হামাসের চালামো হামলার তীব্র নিন্দা করছে, নিরীহ নাগরিকদের পণবন্দি করার নিন্দা করছে বলে একটি অংশ যোগ করতে বলা হয় ওই প্রস্তাবে। কিন্তু দুই-তৃতীংয়াশের সমর্থন না মেলায়, ওই সংশোধন ঘটানো হয়নি।





Source link

https://sluicebigheartedpeevish.com/u4j5ka2p?key=f9b1fb0aab078545b23fc443bdb5baad

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d bloggers like this: