‘আলসেমির উৎসব’! নগদ পুরস্কার জিততে মাসভর বিছানায় শুয়ে কাটাচ্ছেন প্রতিযোগিরা, কোথায়?


নয়াদিল্লি: কে সবচেয়ে বড় অলস (lazy)? খুঁজে বের করতে আয়োজিত হল অলস অ্যাথলিটদের (idle athletes) জন্য প্রতিযোগিতা। অবাক হচ্ছেন? কিন্তু এমনটা সত্যিই ঘটেছে। এমনই এক আজব প্রতিযোগিতার (competition) সন্ধান রইল, যেখানে মাসের পর মাস বিছানায় শুয়ে কাটালেন প্রতিযোগীরা। 

পৃথিবীর সবচেয়ে অলস অ্যাথলিটদের প্রতিযোগিতা

বিশ্বের সবচেয়ে অলস ক্রীড়াবিদ খুঁজে বের করার জন্য একটি অদ্ভুত প্রতিযোগিতায় প্রতিযোগীরা এক মাসেরও বেশি সময় বিছানায় কাটালেন। এবং এখানেই কিন্তু এর শেষ নয়।

মন্টেনেগ্রোয় অনুষ্ঠিত বার্ষিক ‘আলসেমির উৎসব’-এর লক্ষ্য অত্যন্ত সুনির্দিষ্ট। যে প্রতিযোগী সবচেয়ে বেশি সময় শুয়ে থাকতে পারবেন তিনিই জিতবেন ৯০০ পাউন্ড। ভারতীয় মুদ্রায় ৯১ হাজার টাকারর থেকে খানিক বেশি। 

তবে এই বছরের প্রতিযোগিতা নাকি বাকি বছরের রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। এখন প্রতিযোগিতা যে পর্যায়ে দাঁড়িয়ে তাতে শেষ চার প্রতিযোগী এই লড়াই লড়ছেন। 

দেশের অলস ধরনের স্টিরিওটাইপগুলিতে উদযাপন করতে, মজা করার জন্যই, ব্রেজনা শহরের একটি হোটেল গত ১২ বছর ধরে অদ্ভুত এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করে চলেছে। এখানে প্রতিযোগীদের ম্যাট্রেসের ওপর শুয়ে থাকতে হয়, এবং প্রায় কোনওরকম কাজকর্ম কিছুই করতে হয় না। এই লড়াইয়ে জিততে পারলেই তাঁরা বাড়ি নিয়ে যেতে পারবেন নগদ পুরস্কার। এবং সেই সঙ্গে জিতবেন মন্টেনেগ্রোর ‘সবচেয়ে নিষ্ক্রিয় বাসিন্দা’র তকমা।

এই অনুষ্ঠানের এক উদ্যোক্তার কথায়, ‘প্রতিযোগিতাটি মন্টেনেগ্রিনদের অলস হওয়ার স্টেরিওটাইপ সম্পর্কে একটি রসিকতা, এবং অবশ্যই আমরা এমন কিছু একটা করতে চেয়েছিলাম যা অন্য কোথাও কেউ কখনও করেনি।’ এই বছরের প্রতিযোগিতা শুরু হয় ২১ অগাস্টে এবং এখনও চলছে জোর কদমে। 

চলতি বছরে এই প্রতিযোগিতায় নাম লিখিয়েছিলেন ২১ জন। তাঁদের মধ্যে চারজন ‘শয্যা প্রেমী’ এখনও লড়ে চলেছেন। পরিবার, কর্মজীবন, পড়াশোনা ছেড়ে তাঁরা আপাতত প্রতিযোগিতায় লড়তে ‘ব্যস্ত’। একটি বড় বিল্ডিংয়ে পর্দায় নামিয়ে তার শক্ত কাঠের মেঝেতে ম্যাট্রেস পেতে দেওয়া আছে। সেখানেই শুয়ে প্রতিযোগীরা। ঘরজুড়ে কোথাও স্তূপ করে রাখা নোংরা জামাকাপড়, কোথাও খাবার, কম্বল। আর নিজেদের ফোনে নজর দিয়ে বা ঘুমিয়ে সময় কাটাতে ব্যস্ত প্রতিযোগীরা। ২৩ বছর বয়সী বিউটিশিয়ান লিডিজা মার্কোভিক, এই প্রতিযোগিতার অন্যতম অংশগ্রহণকারী। তাঁর কথায়, ‘আমি এখানে ৮০০ ঘণ্টা ধরে রয়েছি। যখন বিরক্ত হয়ে যাব তখন উঠে যাব, তবে সেটা কখন হবে জানি না।’ 

আরও পড়ুন: Asian Games 2023 : এশিয়ান গেমসে স্বেচ্ছাসেবকদের অসাধ্যসাধন, গোটা স্টেডিয়ামের ময়লা ঘেঁটে হারানো সুইচড অফ ফোন উদ্ধার

এই প্রতিযোগিতায় কেউ একবার উঠে বসলে বা দাঁড়িয়ে পড়লে সঙ্গে সঙ্গে বাতিল। কিন্তু মোবাইল ফোন ব্যবহার করা, বই পড়া বা অন্য কারও সঙ্গে দেখা করার অনুমতি রয়েছে তাঁদের। এই বছর যদিও প্রতিযোগিতার নিয়মে খানিক বদল করা হয়েছে। প্রত্যেক ৮ ঘণ্টা অন্তর প্রতিযোগীরা ১৫ মিনিটের বিরতি নিতে পারবেন। এই নতুন নিয়মের সৌজন্যেই এর আগের টানা পাঁচ দিন শুয়ে থাকার রেকর্ড ভেঙে গুঁড়িয়ে গেছে। 

৩৬ বছর বয়সী পেশায় রাঁধুনি, এক প্রতিযোগী বলেন, ‘এতক্ষণ টিকে থাকার জন্য নিজের প্রতি আমি গর্বিত। আমার স্বামী বলেছেন আমাকে, ‘তুমি ছুটিতে আছ। শুয়ে থাক আর মজা কর’। প্রতিযোগিতায় বেশিরভাগ অংশগ্রহণকারী ইউক্রেন, রাশিয়া ও সার্বিয়ার বাসিন্দা। ৩৩ বছর বয়সী, পেশায় ফুটবল ক্লাবের মার্কেটিং ম্যানেজার, এই নিয়ে দ্বিতীয়বার এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছেন। প্রথমে ৯০০ পাউন্ড নগদ পুরস্কারই তাঁর অংশ নেওয়ার মূল উদ্দেশ্য ছিল, কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে জেতার ইচ্ছা ক্ষীণ হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘এখন আমি এখানে আমার নিজের জন্য এসেছি। আমার সীমা নিজের কাছে প্রমাণ করতে… এই পরিস্থিতি জয় করে শেষ পর্যন্ত পৌঁছতে। আমি আশা করি যে এই অভিজ্ঞতা এবং ধৈর্যকে বাস্তব জীবনে স্থানান্তর করতে সক্ষম হব।’

তবে সকলেই যে এই ‘লেজি অলিম্পিক্স’ প্রতিযোগিতার পক্ষপাতী তা নয়। প্রতিযোগী বিউটিশিয়ানের বাড়ির লোক আসায় তা স্পষ্ট। তিনি বলেন, ‘আমার ভাই ও বাবা-মা আমাকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে আসেন এবং কথা দেন যে ফিরে গেলে ১০০০ ইউরো দেবেন। কিন্তু আমি তাঁদের জানিয়ে দিয়েছি যে আমি শেষ পর্যন্ত থাকব।’

আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম টেলিগ্রামেও। যুক্ত হোন

https://t.me/abpanandaofficial



Source link

https://sluicebigheartedpeevish.com/u4j5ka2p?key=f9b1fb0aab078545b23fc443bdb5baad

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d bloggers like this: